সেমি-ফাইনালে টাইব্রেকারে স্পট কিক সেভ করেছিলেন ভারতের গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধু। ফাইনালেও একটি স্পট কিক ফিরিয়ে দলের জয়ের নায়ক তিনি। তবুও গুরপ্রীত এবারের বঙ্গবন্ধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা গোলরক্ষক নন। গোলবারে এই আসরের সেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন বাংলাদেশের আনিসুর রহমান জিকো।
হার দিয়ে শুরুর পর এবারের সাফে অভাবনীয় ফুটবল উপহার দিয়ে সেমি-ফাইনালে পা রাখে বাংলাদেশ। সেখানে তারা হেরে যায় শক্তিশালী কুয়েতের কাছে। ২০০৫ সালের পর ফাইনাল খেলার স্বপ্ন তাই বাস্তবে রূপ নেয়নি, ২০০৩ সালের পর ট্রফি জয়ের দলীয় চাওয়া পূরণ হয়নি। তবে জিকোর নৈপুণ্যে ব্যক্তিগত একটি পুরস্কারের সম্মান অন্তত এলো বাংলাদেশের ফুটবলে।
গ্রুপ পর্ব ও সেমি-ফাইনাল মিলিয়ে বাংলাদেশের চার ম্যাচেই পোস্ট সামলেছেন জিকো। ক্লিনশিট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি একবারও; সব মিলিয়ে পরাস্ত হন মোট পাঁচবার। তবে এই সাধারণ পরিসংখ্যান ফুটিয়ে তুলতে পারছে না তার পারফরম্যান্সকে।
২০০৯ সালের পর সাফে বাংলাদেশের প্রথম সেমি-ফাইনালের মঞ্চে উঠে আসায় দারুণ অবদান ছিল জিকোর। ম্যাচের পর ম্যাচে গোলবারে তিনি ছিলেন দলের আস্থার জায়গা। কুয়েতের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে ১০৭ মিনিটে গোল হজমের আগে ও পরের বাকি সময়টায় বাংলাদেশের পোস্টের নিচে শক্ত দেয়াল হয়ে ছিলেন তিনি।
বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে ওই সেমি-ফাইনালের ২৯ মিনিটে ইদ আল রশিদির শট অনেকটা লাফিয়ে এক হাতে ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন জিকো। প্রথমার্ধের শেষ দিকেও কুয়েতের এই ফরোয়ার্ডের শট আটকান তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধেও পোস্টে তিনি ছিলেন প্রাচীর হয়ে। ৬১তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আহমেদ আল দেফেরির ফ্রি কিক ফিস্ট করে ফেরানোর দুই মিনিট পর রুখে দেন আল রশিদির আরেকটি প্রচেষ্টা।
৭৪তম মিনিটে আল রশিদির সাইড ভলি দারুণ দক্ষতায় আটকে বাংলাদেশের সম্ভাবনার আলো জ্বেলে রাখেন তিনি। অতিরিক্ত সময়ে প্রথম অর্ধে ওয়ান অন ওয়ান পজিশনে আল খালিদির শট আটকে দেন তিনি।
কিন্তু ১০৭তম মিনিটে আর পারেননি। আব্দুল্লাহ আল বোলৌশির বুদ্ধিদ্বীপ্ত শটের বিপক্ষে কিছুই করার সুযোগ পাননি জিকো। তপু বর্মনের পায়ের ফাঁক দিয়ে শট নিয়েছিলেন বোলৌশি, জিকো কিছু বুঝে উঠতে পারার আগেই বলে দূরের পোস্ট দিয়ে জড়ায় জালে। এই গোলটি শেষ পর্যন্ত গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় বাংলাদেশের।
এবারের আসরে সেমি-ফাইনালে খেলা চার দলের গোলরক্ষকদের মধ্যে জিকো সবচেয়ে বেশিবার পরাস্ত হয়েছেন। কিন্তু তার পরও এতটাই অসাধারণ পারফরম্যান্স যে, তাকেই বেছে নিতে হয়েছে সেরা হিসেবে।
পাঁচ গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা ভারতের তারকা ফরোয়ার্ড সুনিল ছেত্রি। গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক উপহার দেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো, আলি দাইয়ি ও লিওনেল মেসির পরেই থাকা এই অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড।
সাফের সর্বোচ্চ গোলাদাতার তালিকায় মালদ্বীপের আলি আশফাকের (২৩) পাশে থেকেই এবারের আসর শেষ করলেন সুনিল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এই ৩৮ বছর বয়সী তারকার গোল ৯২টি।
পাঠকের মতামত